বিজনেস স্টার্ট-আপ ও লাইসেন্সিং

বিজনেস স্টার্ট-আপ ও লাইসেন্সিং

ব্যবসাকে অনেকে খুব সহজ ও সাধারণ বিষয় বলে মনে করেন। আবার কারো কারো কাছে তা খুবই কঠিন একটি কাজ। ব্যবসার রয়েছে বিভিন্ন ধরণ। কেউ কেউ পণ্য কেনা-বেচা করে বা আমদানি-রপ্তানি করে। কেউবা পণ্য উৎপাদন করে তা বিপণনের ব্যবস্থা করে। যিনি মেধা খাটিয়ে পণ্য উৎপাদন করেন তিনি হচ্ছেন উদ্যোক্তা। বিষয়টিকে একটু খতিয়ে দেখা যাক। বিভিন্ন বিষয়ের উপর ব্যবসার সাফল্য নির্ভর করে। এসব বিষয়ের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে ব্যবসায়িক কলাকৌশল, পদ্ধতি ও নিয়ম-কানুন।

ব্যবসা শুরু করার পূর্বে এসব  জানা প্রয়োজন। সর্বপ্রথম প্রয়োজন ‘আমি ব্যবসা করব’ এ ধরণের মানসিক প্রস্তুতি। এরপর সঠিক দিকনির্দেশনা, মূলধন ও সম্পদের প্রাপ্যতা নিয়ে ভাবনা ও পরিকল্পনা। একটি সুষ্ঠু কর্মপরিকল্পনা পর্যায়ক্রমে একজন উদ্যোক্তা/ব্যবসায়ীকে তার লক্ষ্যের দিকে পৌঁছতে সাহায্য করবে। মূলধন ও সম্পদ ব্যবসার জন্য অত্যাবশ্যকীয় হলেও মুখ্য বিষয় নয়, কেননা সঠিক দিকনির্দেশনা অনুযায়ী অগ্রসর না হলে তাতে বিনিয়োগের সমূহ ক্ষতির আশঙ্কা থাকে।

একজন উদ্যোক্তা/ব্যবসায়ী হতে হলে কিভাবে ব্যবসা আরম্ভ করতে হবে তা সবার আগে জানতে হবে। কিভাবে ট্রেড লাইসেন্স, কোম্পানী রেজিষ্ট্রেশন করতে হবে, কিভাবে ব্যাংক একাউন্ট খুলতে হবে, বিজনেস প্ল্যান বা ব্যবসায় পরিকল্পনা তৈরী, বিভিন্ন নিবন্ধন ও লাইসেন্স যেমন: পরিবেশ ছাড়পত্র, ফায়ার লাইসেন্স, ফ্যাক্টরী স্থাপনার রেজিষ্ট্রেশন, বয়লার রেজিষ্ট্রেশন, পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস রেজিষ্ট্রেশন ইত্যাদি, অবকাঠামো ও ইউটিলিটি সার্ভিস, ট্যাক্স ও ভ্যাট, কোয়ালিটি সার্টিফিকেশন, আমদানি ও রপ্তানি পদ্ধতি, পণ্য উৎপাদন ও বিপণন ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি বিষয়গুলো সম্পর্কে একজন উদ্যোক্তার স্বচ্ছ ধারণা থাকতে হবে।     

বাংলাদেশে একজন উদ্যোক্তা হতে হলে আপনাকে পর্যায়ক্রমে যে কাজগুলো করতে হবে সেগুলো নিম্নরূপ :

ধাপ-১ : প্রথমে সিদ্ধান্ত নিতে হবে ‘আপনি ব্যবসা করবেন’। এরপর আপনাকে ঠিক করতে হবে কোন্ ব্যবসাটি আপনার জন্য উপযুক্ত? একইসাথে ব্যবসার ধরণ ঠিক করতে হবে-ট্রেডিং অথবা উৎপাদনমূলক অথবা সেবামূলক ব্যবসা। ব্যবসার ধরণ ঠিক করার পর আপনার ব্যবসা করার জন্য অফিস বা কারখানা করার জন্য স্থান নির্দিষ্ট করতে হবে। ব্যবসাটির সম্ভাব্যতা যাচাই করে একটি ব্যবসায় পরিকল্পনা তৈরী করতে হবে। 

ধাপ-২ : ব্যবসা শুরুর জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের সংস্থান অর্থাৎ মূলধন যোগাড় করতে হবে।

ধাপ-৩ : আপনাকে ঠিক করতে হবে আপনি একক ব্যবসা করবেন না যৌথ মালিকানাধীন ব্যবসা করবেন। যৌথ মালিকানাধীন ব্যবসা করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলে ঠিক করতে হবে কাকে পার্টনার/অংশীদার হিসেবে নিবেন। 

ধাপ-৪: ব্যবসার জন্য উপযুক্ত স্থানে জমি ক্রয়/ভাড়া/লীজ নিতে হবে।

ধাপ-৫: ব্যবসার গঠন/কাঠামো অনুযায়ী ট্রেড লাইসেন্স অথবা কোম্পানি রেজিষ্ট্রেশন করতে হবে।

ধাপ-৬ :ব্যবসা সংক্রান্ত অন্যান্য রেজিষ্ট্রেশন ও লাইসেন্স সংগ্রহ করতে হবে।

ধাপ-৭ : নির্ধারিত জায়গায় শিল্প স্থাপন করতে হবে।

ধাপ-৮ : শিল্প প্রতিষ্ঠানে বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি, পয়ঃসংযোগ প্রভৃতি ইউটিলিটি সার্ভিস নিশ্চিত করতে হবে।

ধাপ-৯ : ব্যবসার জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশ ক্রয়, কাঁচামাল ক্রয় এবং টেকনোলজী/প্রযুক্তি নির্বাচন করতে হবে।

ধাপ-১০ : যথাযথ পদ্ধতি মেনে প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ দিতে হবে।

ধাপ-১১ : ব্যবসায় পরিকল্পনা অনুযায়ী পণ্য উৎপাদন এবং বিপণন করতে হবে।